Saturday, June 17, 2017

বিষয়ঃ আলোচনা

প্রিয় পাঠক/ব্লগার,

কূটকচালী ইন ফেসবুক

 

হে তত্ত্ববাগীশ উর্দ্ধপাদ দন্ড এলিট “খ্যালখাটান্স”!!


ফেসবুক- মে ২০১৬

পোস্ট কলোনীয় নিয়তি!!

 

আমাদের এই কচুপোড়া দেশে শিল্পী হতে গেলে তো অবশ্যই একটা লবি (বা হাউস)-এর অনুমোদন লাগে সেটা খচ্চর এবং ঢ্যামনারা শিল্পী হবার আগেই হাতিয়ে নেয়, অনেক ঘষাঘষি কারে শেষমেশ একজন আঁকিয়ে হয় মাত্র! আর যাঁর সময়ই নেই ঐসব মানি-মার্কেট-ডিলারশীপ সিস্টেমের স্বপ্নে বিভোর হবার, পেটের খিদেতে তুলি ডুবিয়ে মনের খিদে দিয়ে রঙ মাখিয়ে স্থির ক্যানভাসের মধ্যে অস্থিরতার ঝড় তুলতে পারেন তাঁরাই শিল্পী হয়ে ওঠেন সিরিয়াস দর্শকের মগ্ন চেতনায়! সেই হিসেবে রামকিঙ্কর যদি উড়ন্ত পক্ষী হন বেশিরভাগ সব আরশোলা মাত্র!!! ইহাই আমাগো পোস্ট কলোনীয় নিয়তি!!
রামকিঙ্করের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপক ফেসবুকে প্রকাশিত একটি আলোচনাকে কেন্দ্র করে এই মন্তব্য পোস্ট করা হয়েছিল।
ফেসবুক- ৯/৫/২০১৬

খুচরো পাপ এবং এক হাউয়াই চটির জীবন দর্শন..

 

হ্যাঁ আবারও বলব! ভন্ডামী আর চাতুরীর খোলোশ ছেড়ে বলব অসংস্কৃত হাউয়াই চটির জীবন দর্শন ও তার ক্ষমতা সার্থক হোক! গোটা লাইব্রেরী গিলে খাওয়া তত্ত্ববাগীশ উর্দ্ধপাদ দন্ড এলিট বুদ্ধিজীবীদের ভ্রুকুটি উপেক্ষা করে বলব ঐ মেয়েগুলো আমারও মেয়ে, ঐ মেয়েগুলো সাইকেল পেলে ওদের লেখাপড়াটা হবে, ঐ মেয়েগুলো বইখাতা পেলে ওদের লেখাপড়াটা হবে, ঐ মেয়েগুলো টাকা পেলে ওদের লেখাপড়াটা হবে, ঐ মেয়েগুলোর  লেখাপড়া হলে ওদের সন্তানদেরও লেখাপড়াটা হবে, ওদের সন্তানদের লেখাপড়াটা হলে ওদের সন্তানরা জীবনের মানে খুঁজে পাবে, পথ খুঁজে পাবে! আর সেটা হলে আত্মশক্তি বা স্ব-নির্ভরতাও সবল হবে। ওরা চ্যালেঞ্জ জানাবে ভদ্দরলোকের সমাজকে! যদিও সকলের জানা তবু আর একবার  নৈরাজ্যবাদীর মতন খুঁচিয়ে ঘা করি – একটা সংযোজন-

“…এখানে একটা কথা তুললে ভীষণ বিতর্ক বেধে যাবে। সেটা হল ভারত  আর ইন্ডিয়া-দুটো দেশের কথা যা অনেকেই মানতে চাইবেন না। কিন্তু তাতে তো সত্যটা পালটে যাবে না বা মিথ্যে হয়ে যাবে না। হাজার চেষ্টা সত্ত্বেও সত্যটা সত্য-র জায়গাতেই থেকে যাবে। সেটাই বাস্তব। সেই বাস্তবতাকে উপলব্ধি করার মতন মন আছে কার? কোন শ্রেণীর মানুষের আছে? যাঁদের থাকার কথা তাঁরা তো অন্য স্বপ্নে বিভোর! সে স্বপ্নের নাম গ্লোবালাইজেশান! খুব গালভরা নাম একটা! ভাবলে মনে হয়, কি না কি একটা বিপ্লব ঘটে গেছে সারা বিশ্বে! সারা পৃথিবী এক হয়ে গেছে। এ এক মস্ত ভুবনগ্রাম। এইসব হাবিজাবি অজস্র আবর্জনা সুলভ কথাবার্তা আমাদের প্রতিনিয়ত গেলানো হচ্ছে যা হজম তো হচ্ছেই না উলটে বদ হজমের চোঁয়াঢেঁকুর ও তার বিশ্রী পচা দুর্গন্ধে সামগ্রিক চিন্তার জগত, তার পরিবেশ বিষাক্ত হচ্ছে। আসলে যে কি ঘটছে সেটা জানবার বা শোনবার মতন মন আছে কার? উন্নয়নের গুঁতোয় সবাই এখন সামনের দিকে পড়িমরি করে ছুটছেন কি করে গ্লোবাল-মেল নামের ট্রেনটাতে দ্রুত উঠে পড়া যায়, না হলে যে ইহজীবনের ভোগবাদটাই হয়ত ফসকে যাবে! মনের মণিকোঠায় তাঁদের কারেন্সি হল ডলার, রাজধানীগুলো হল লন্ডন-ওয়াশিংটন-টরেন্টো-মস্কো-বেজিং-টোকিও, ইউনিক গ্লোবাল পোশাক, ইউনিক গ্লোবাল খাদ্য এমনকি ইউনিক একটা কালচারের প্রতি তীব্র আকর্ষণ–এক কথায় নিজভূমে পরবাসী কিন্তু মনে মনে বিশ্বনাগরিক “ঘেঁটে ঘ” হওয়া আর সেই সঙ্গে মেধা, প্রতিভার বিসর্জন, ব্রেন ড্রেন! এই হল পোশাকি বিশ্ব নাগরিকত্ব-র চেহারা! এঁরা হচ্ছেন ইন্ডিয়ার আলোকপ্রাপ্ত নাগরিক লোক নাকি নাগরিক জঙ্গল, কে জানে? এঁরা পণ্য-মৈথুন মৌতাতে মেতে আছেন, বিরাট সংখ্যক প্রায় ২৫ কোটির কনজিউমার ক্লাস যাঁদের দিকে শ্যেন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন দেশি-বিদেশী বিনিয়োগকারীরা। ইন্ডিয়ার এই নাগরিকরা জলের বোতল আর সেল ফোন হাতে শপিংমলে চরে বেড়ায় আর তখন ভারতের লোক ফুটো হাঁড়ি নিয়ে নদীর চরে জল খুঁজে বেড়ায়। রাষ্ট্রের উচ্চপদাধিকারী আমলা ফ্রান্সের জনসাধারণকে অনুরোধ করে বলে আসেন–আপনারা বলিউড দেখে ভারতকে চিনবেন না। এর চাইতে নির্মম সত্য আর কি হতে পারে? এইখানেই ভাগাভাগিটা হয়ে যাচ্ছে–একটা দেশের মধ্যে আর একটা দেশ। পাঁচহাজার বছরের পুরনো একটা দেশের যে সামাজিক বিধি ব্যবস্থা ছিল তা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছিল ঔপনিবেশিক কারণে অথচ গড়ে ওঠেনি উপযুক্ত নতুন কোনও আধুনিক ব্যবস্থা–রাস্তা নেই, আলো নেই, পাণীয় জল নেই, স্কুল নেই, কলেজ নেই, নেই হাসপাতাল–যেটুকু আছে তারও টিমটিমে করুণ অবস্থা। অনুদান যা আসে তাও বারো ভূতে লুটেপুটে খায়। ঘুটঘুটে অন্ধকার তার মধ্যে টুনি বাল্বের মতন আলো ঠিকরচ্ছে কসমোপলিটান শহরগুলো যেখানে পাশাপাশি ভোগ আর উন্নয়ন হাত ধরাধরি করে চলছে। স্বভাবতই একটা বৈষম্য প্রকট, প্রান্তিক অঞ্চল আর একটা কসমোপলিটান শহরের মধ্যে ব্যবস্থার আসমান জমিন ফারাক।”.. “দেহের সমস্ত রক্ত মুখে এসে জমছে।”

খুচরো পাপ এবং মুষড়ে পড়া ডোল অর্থনীতি  না আত্মশক্তি– যে ঘোড়ার ডিমই হোক না কেন…

 

ফেসবুক- ১০/৫/২০১৬

আমার অবশ্য চাল গম নিয়ে মাথাব্যাথা নেই! জন্মের পর থেকেই শুনছি চাল গম পচা খুদকুড়ো কাঁকর — তাই খেয়েই এদেশের হতভাগারা বেঁচে থাকে! ছোটবেলায় শুনেছিলাম পি এল ফোর গমের কথা যা নাকি সঙ্কট সৃষ্টি করার জন্য মহান ইউয়েশীয়ানরা সমুদ্রে ফেলে দিত যেমন নাকি ফেলে দেওয়া হত আমাদের দেশে হাজার হাজার লিটার গরুর দুধ বম্বের উপকুলে এই কারণে যে যথাযথ সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেই বলে, তবুও হতভাগারা পেত না!!..এদেশের খেতে না পাওয়া মানুষরা আর কবেই বা পেট পুরে খেতে পেল এখন যদি পায় তাতে ক্ষতি কি সাড়ে চার হাজার ক্ষতি তো! তা অমন সাড়ে চার হাজার তো ৪৭-এর পর থেকে কতবার উধাও হল ঘুষ/কাটমানি/শিল্পপতিদের ব্যাঙ্কের লোন শোধ না করা / কাজে ফাঁকি দেওয়া সরকারী কর্মীদের ডিএ ভাতা ইত্যাদি / ..এই তো সেদিন ৩৮ কোটি টাকায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বউ- এর আঁকা ৮ খানা ছবি কিনল এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া / মহাকাশ যাত্রায় কত শো কোটি, নাঃ! কোটির নিচে কোনও কথা নেই! বেশ ভাল! আচ্ছা আমার একটা প্রস্তাব প.ব. সরকার যদি ৩৬ লক্ষ সাইকেলের মত ৩৬ লক্ষ ন্যানো (এলিট আমুদে বাঙালীর সাধের গুবরে পোকা!) মধ্যবিত্তদের মধ্যে বিলোয় তাহলে কেমন হয় কেমন বগল বাজানো হবে কেমন ডায়ালগ চলতে থাকবে পথেঘাটে টিভির পর্দায় খবরের কাগজের পাতায় সবার আগে কারা দৌড়বেন কেমন ডিগবাজী খাবেন সুবোধরা ইস!…ভোটের আগে বললেন না কেন? তাহলে তো আপনাকেই…! আমি অবশ্য ভোটেও নেই ভাঁটামিতেও নেই, কোনও পলিটিকো নেই আমার, নোটাতে আছি, এই গ্যাঁড়াকলের তন্ত্র (বা গণতন্ত্র) আমার কাছে ভয়ানক রকমের দুর্বোধ্য ! আর এ যাবৎ জন্মের পর (জ. ১৯৬০) থেকে কেন্দ্র বা রাজ্য কারুর কাছ থেকেই এক পয়সাও নিই নি, দরকার হয় নি, ঐ যে আত্মশক্তি না কি যেন গুরুদেব বলেছেন তার জোরে ! যাইহোক অনেক ভাঁটালাম খাল্পাড়ের বস্তিবাসীদের মতন, তবু একটা কথা বলি যে আমার জন্ম ইস্কুল মাস্টারের ঘরে তাই হয়ত বুঝেছিলাম লেখাপড়াটা কত জরুরী আমার বাবা প্রায় নিঃস্ব হলেও তাঁর ছাত্ররা সুপ্রতিষ্ঠিত) তাই চাল গমের থেকেও জরুরী ছিল এই প্রশ্নটা যে ঐ ৩৬ লক্ষ বা তার বেশী মেয়েগুলো যদি  বিনাপয়সায় সাইকেল পেয়ে বইখাতা পেয়ে, খাবার পেয়ে ক্লাশরুমে পাঠ নিয়ে খাঁড়া হয়ে দাঁড়াতে পারে যদি আত্মসচেতন হতে পারে যদি ভবিষ্যতে তার বাচ্চাদেরকে শেখাতে পারে তবে কয়েকটা প্রজন্মের পর নিঃস্ব প্রান্তিক বাংলা হয়ত স্ব-নির্ভর হলেও হতে পারে, সেটা মুষড়ে পড়া ডোল অর্থনীতি হল না আত্মশক্তি হল — যে ঘোড়ার ডিমই হোক না কেন সেটা পরে বোঝা যেত!.. “হয়তো ওরাই প্রান্তিকতার উন্নয়ন দিয়ে ভোগবাদী ইন্ডিয়াকে ঘিরে ফেলবে সেদিন বোঝা যাবে মুখ আর মুখোশের পার্থক্য, উন্মুক্ত হবে আমাদের প্রকৃত চরিত্র সেদিনই শুরু হবে আমাদের স্বাধীনতা যোদ্ধাদের অমলিন স্বপ্ন সফল হওয়া বিদ্যাসাগরের অসমাপ্ত আরাধ্য কাজের জয়যাত্রা!!” অথবা যুক্তি তক্কো গপ্পো-র “লাচো লাচো তইমরা না লাইচলে কিচ্ছুটি হবার লয়” !

ডোল অর্থনীতি বনাম অনুদান নির্ভর অর্থনীতি নিয়ে চলা কথোপকথনের উপর আলোচনায় এই মন্তব্য দুটো ফেসবুকে পোস্ট করা হয়েছিল।
–বাংলা ব্লগারু

This entry was posted in আলোচনা, সংবাদ, সমাজ and tagged , , , , , , , , , , , , , , , , , , , , , , , , , , , , , , . Bookmark the permalink

No comments :

Post a Comment